Author picture

Tanvir Shahriar Rimon

নতুন প্রতিষ্ঠানে জয়েন করেই হায়ার ফায়ারে যাবেন না !

 

 

এটা প্রায়শই দেখা যায় কোন প্রতিষ্ঠানে নতুন নেতা যোগ বেশি দেয়ার পর কর্মীদের মাঝে একধরনের অস্থিরতা দেখা দেয় ।

অনেকে ভাবতে থাকেন যে নতুন সিইও হয়ত নতুন টিম বানাবেন কাজেই তাদের চাকরি থাকবেনা, এটা সব সেক্টরে কম বেশি আমি দেখেছি । 

এসময় পুরাতন কর্মীরা নতুন নেতার সুনজরে আসার জন্য একধরনের তোষামোদি শুরু করেন , অনেক সময় দেখা যায়  সদ্যবিদায়ি নেতার নামেও নানা উল্টা-পাল্টা কথা বলেন ,  মিথ্যা গল্প বলে বেড়ান । প্রকৃত  নেতা যারা তাঁরা কখনই এরকম আচরণ এপ্রিশিয়েট করেননা বরং তাঁরা এটাকে একজন কর্মীর দুর্বলতা হিসাবেই দেখেন । 

আমিও আমার লিডারশীপ রোলে এই বিষয়গুলোর অভিজ্ঞতা নিয়েছি । এবং এসব বাজে সংস্কৃতিকে গলা টিপে মেরে ফেলেছি শুরুতেই । 

এখন নতুন নেতা যখন নতুন পরিবেশে আসলেন তারতো নিজের মত বিশ্বস্ত একটা টিম দরকার বিশেষ করে ম্যানেজমেন্ট টিম দরকার, তো তিনি কি করবেন ? 

অনেক সময় বোর্ড নেতাদের এই স্বাধীনতা দিয়ে দেয় নিজের মত টিম সাজানোর । 

তখন তাঁরা এসেই প্রথম যে কাজটা করেন সেটা হলো একদম পছন্দ মত ম্যানেজমেন্ট টিম সাজাতে অনেক সিনিয়র টিমমেম্বারদের বাদ দিয়ে দেন এবং সেট অনেকটা তাড়াহুড়া করেই । 

ব্যাংক, বিমা, রিয়েলএস্টেট সবখানে এটা হতে দেখেছি আমি । আমার পরামর্শ হল কাউকেই বাদ না দেয়া বরং যারা ম্যানেজমেন্টটিম এ আছেন তাদের যোগ্যতা বুঝার জন্য অন্তত ৬ মাস দেখা । বাদ দিয়ে দেয়ার চাইতে সহজ এবং দুর্বল নেতৃত্ব আর কিছু আছে বলে আমি মনে করিনা । 

অনেক সময় দেখা যায় পুরাতন অনেক ম্যানেজমেন্ট মেম্বার নতুন নেতাকে সঠিক পরামর্শ দেননা বরং ভুল পথে ইচ্ছা করে গাইড করেন  অনেক সময় দেখা যায় নতুন নেতাকে অনেকে সহজ ভাবে মেনে নিতে চায়না । 

ওরা অনেক সময় নেতার পেছনে সমালোচনা করে , দেখা গেল নেতা নতুন কোন কালচার চালু করতে চাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ।তখন ওরা আড়ালে আবডালে কথা বলে এবং নেতার ফোকাস নষ্ট করতে চায় । 

এটা আমি দেশের অনেক বড় বড় কর্পোরট নেতার মুখ থেকেও শুনেছি , আমি নিজেও এটা আমার ক্যারিয়ারেও মোকাবিলা করেছি  । 

অনেকে থাকে যারা দীর্ঘদিন ওই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার ফলে অনেক বোর্ড পরিচালক এর সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক তৈরি করে ফেলেএবং নতুন নেতা আসার পর ওই সব পরিচালকদের কান ভারী করতে থাকে । 

এখন ওরা এটা বুঝেনা যে একজন পরিচালক তিনি যদি তাঁর প্রতিষ্ঠানের মঙ্গল চান তাহলে কখনই ওই সব লোকের কান কথাশুনবেননা । 

আমার একটা অভিজ্ঞতা বলি । একবার আমি একটা প্রতিষ্ঠানে যোগ দেয়ার পর এরকম একজন এক পরিচালকের কাছে গিয়ে আমার নামে উল্টাপাল্টা কথা বলল । ওই পরিচালক আমাকে ফোন করে বললেন যে অমুক আপনার বেপারে আমার কাছে এসে কিছু কথা বলেছে যা আমি জানি সে ইম্ফেরিয়রিটি  কমপ্লেক্স থেকে বলেছে , তবে আমার মতামত হল ইউ সুড গেট রিড অব হিম  ! 

আমি বললাম ভাই , থ্যাংকস ফর ইউর এডভাইস । 

পরে আমি ওই ম্যানেজমেন্ট মেম্বার কে বুজতেই দিলাম না যে তিনি এরকম কিছু একজন বোর্ড পরিচালককে বলেছেন যা আমার কানে এসেছে । বরং আমি আবিষ্কার করি তাঁর মাঝে কিছু ভালো কোয়ালিটি আছে যেগুলো আমার প্রতিষ্ঠানে ভ্যালু অ্যাডকরবে । আমি ওই টিম মেম্বারকে ফাইন টিউন করা শুরু করলাম , এবং তিনি আমার টিমের একজন নির্ভর  করার মত সদস্য হয়ে উঠলেন । 

ওই পরিচালক আমাকে একদিন বললেন , রিমন, দ্যাটস অ্যামেইজিং ! আন্ডার ইউর গাইডলাইন হি ট্রান্সফরমড লাইক ম্যাজিক ! হাউ ডিড ইউ ডু দ্যাট ? 

আরেকটা জিনিশ আমি বলি সেটা হলো কখনো কাউকে ছুঁড়ে না ফেলে সবার জন্য একটা কেপিআই (কি পারফরমেন্স ইন্ডিকেটর) ঠিক করে দেন । আপনার গতির সাথে দৌঁড়ানোর মতো টিম তো আপনার লাগবে । মনে করেন আপনি ৪০০ মিটারস্প্রিন্টে দৌঁড়ানোর লোক । আপনার আসে পাশে যারা আছে আপনার গতির সাথে দৌঁড়ানোর মতো ফিট নয় । তখন আপনার কাউকেই  বাদ দিতে হবেনা । সে যেখন তার কেপিআই স্কোর দেখবে সে নিজে নিজেই ট্র্যাকের বাইরে চলে যাবে । ওরাই নতুনচাকরি খুঁজবে , আপনার কাউকে বাদ দিতে হবেনা । 

এইসময় যারা টিকে যাবে তারাই গেম চেঞ্জার । তাদের যত্ন নিন । 

-লিডারশিপ ইন্টেলিজেন্স/তানভীর শাহরিয়ার রিমন/পৃষ্ঠা ৬৯-৭০

রকমারি লিংক : https://www.rokomari.com/book/213004/leadership-intelligence

 

Subscription

Leave a Reply