আজ বিকালে আমার পরিচিত এক পেশাজীবি ফোন করে জানালেন মাস শেষ হয়ে গেলেও তিনি বেতন পাননি । এরকম আরো কিছু খবর আমি শুনেছি-মার্চে অনেক বড় প্রতিষ্ঠানও নাকী কর্মীদের বেতন পরিশোধ করেনি কিংবা করতে পারেনি ।
দেশে যে কটি ব্যবসায়ী গ্রুপ কর্মীদের সঠিক সময়ে বেতন ভাতা পরিশোধ করে আমাদের গ্রুপটি তার অন্যতম । আমি এই গ্রুপের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসাবে গর্বিত ।
করোনা উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যে কটি প্রতিষ্ঠান কর্মীদের নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে সর্বাগ্রে প্রাধান্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের গ্রুপ তার প্রথম সারিতে । আমরা প্রথম দিকে অলটারনেটিভ ওয়ার্ক ডে শুরু করি । অর্থ্যাৎ ৫০ শতাংশ কর্মী ঘরে বসে যেদিন কাজ করবে সেদিন ৫০ শতাংশ কাজ করবে অফিসে বসে ।তার কিছুদিন পর সামগ্রীক অবস্থা বিবেচনায় আমরা কর্মীদের বাসায় বসে কাজ করার নিয়ম চালু করি । কেবল আমাদের কর্মীদেরই নয় বরং আমাদের সম্মানীত গ্রাহকদের স্বাস্থ্যঝুকি কমাতে এছাড়া আর কোনো উপায়ও ছিলনা । আমাদের টেলেন্টেড আইটি ডিপার্টমেন্ট তড়িৎ প্রত্যেকের বাসায় প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজে অফিস করার সুব্যবস্থা করে দেয় ।
পাশাপাশি আমাদের যারা গ্রাহক আছেন তাদের সাথেও আমরা প্রযুক্তির মাধ্যমে যু্ক্ত থাকার চেষ্টা করি । তাদের খোঁজ খবর নিই ।
সরকারী নির্দেশ মোতাবেক যখন লক ডাউনের সিদ্ধান্ত আসে তখন আমরা কর্মীদের এবং শ্রমিকদের দ্রুত বেতন এবং পাওনা পরিশোধ করি । আমরা বিশ্বাস করি, কর্মীরা নিরাপদ থাকলে, সুস্থ থাকলে আমাদের যে বিজনেস মিশন তা অর্জিত হবেই -হয়তবা কাছাকাছি সময়ে কিংবা কিছুটা বিলম্বে ।
। কারন আমাদের কর্মীরাইতো আমাদের সম্পদ । দ্যা আর দ্যা রিয়েল গেম চেঞ্জার ।
যে কথা দিয়ে লিখাটা শুরু করেছিলাম, সে জায়গায় আবার ফিরে যাই । যারা বেতন পরিশোধ করেননি, কিংবা করতে পারেননি তাদের প্রতি অনুরোধ থাকবে- কর্মীদের পাশে থাকুন । ছাঁটাই কিংবা সেলারী আটকে রেখে যে সমাধান অনেকে খুঁজছেন আদতে তা বুমেরাং হতে পারে । বরং কর্মীদের ভরসা দিতে পারলে তারাই সাময়িক ক্ষতিটা পুষিয়ে দেবে ।
আর যেসকল কর্মী বেতন পাননি, তাদেরকে বলব একটু ধৈর্য ধরুন । কোম্পানীর সমস্যাকে নিজের সমস্যা ভাবুন । প্রয়োজনে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন । যে প্রতিষ্ঠানে এতদিন কাজ করেছেন আজ এক মাস বেতন না পেয়ে হতাশ হয়ে সে প্রতিষ্ঠানের নামে বদনাম ছড়াবেননা প্লিজ । বরং উপায় বের করুন কী করে সংকট কাটিয়ে আবার ঘুরে দাঁড়ানো যায় ।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে খুব আশাবাদী মানুষ । আমার বিশ্বাস, ইনশাল্লাহ, এই সংকট কেটে যাবে, আমরা ফের ঘুরে দাঁড়াব । তার আগে আমাদের দেশের যে বিশাল কর্মী বাহিনী (১৬০ মিলিয়ন) তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে ।