আমি ফাইভ এ এম ক্লাবের মেম্বার অনেক লম্বা সময় ধরে । এই ক্লাবের মেম্বার হওয়ার অভাবনীয় কিছু বেনিফিট আমি পাই যার মাধ্যমে এই ভীষণ ডায়নামিক সময়ে টাইম ম্যানেজমেন্ট নামে যে গোলকধাধা অনেকে সল্ভ করতে হিমশিম খান, আল্লাহর রহমতে আমার কাছে তা খুবই সরল-সোজা মনে হয় ।
এই ক্লাবের সদস্য হয়ে গেলে ইউ নট অনলি গেইন এ্যা ফাইন এজ অভার টাইম ম্যানেজমেন্ট বাট অলসো ইউ উইল এক্সপেরিয়েন্স স্পিরিচুয়াল মাস্টারি,অনেকে হয়ত এটা শুরুতে বিশ্বাস করতে চাইবেনা । বাট আই প্রমিস, একবার অভ্যস্থ হয়ে উঠলে আপনি কখনই আর এই অভ্যাস ছাড়তে চাইবেননা ।
আমি একটা একটা করে বলি । একটু ধৈর্য নিয়ে শুনতে হবে । বুঝতে হবে ।
( ১ ) ঘুমাতে হবে রাত ১১ টার মধ্যে :
ধরেন, আপনি খুব লেটে ঘুমাতে যান । ধরে নিলাম অনেক গভীর রাতে, মানে রাত ২ টায় ।তাহলে আপনি কখনই হয়তবা কোয়ালিটি স্লিপ পাবেননা যেটা আপনার শরীরের জন্য দরকার ।কারণ কোয়ালিটি স্লিপের জন্য রাতের প্রথমার্ধ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এবং এই সময়টা রাত ১টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়,কাজেই আপনি কতক্ষণ ঘুমালেন তারচেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কখন ঘুমালেন এবং কতটা ভালো ঘুমালেন । চোখ বন্ধ করে পড়ে থাকাকে ঘুম বলেনা । ঘুম হতে হবে কার্যকরি যেটা সারাদিনের জন্য আমাদের রিচার্জ করবে । অনেকটা নিজের শরীরে ফুয়েল ভরার মতোই ।
এখন আপনি যদি রাত ১০টা থেকে ১১ টার মধ্যে ঘুমিয়ে ভোর পাঁচটায় উঠে যেতে পারেন তাহলে আপনার ৬/৭ ঘন্টা ঘুম হয়ে যাচ্ছে । এই সময়ের ঘুম আমাদের শরীরে জন্য বেশি উপকারী ।
(২) সৃষ্টিকর্তার প্রতি গ্রেটিটিউড:
আপনি যখন ৫টায় জেগে উঠলেন তখন চারপাশে নীরবতা ।কোনো হৈ হুল্লোড় নেই, বাচ্চাদের চেচামেচি নেই, টিভির কৃত্রিমআওয়াজ নেই, আছে শুধু প্রকৃতির উদার হস্তে বিলানো নির্মল বাতাস । আছে পূব আকাশে সূর্য উঠার দারুন মুহূর্ত । এটা আপনি কেন মিস করবেন ?
আপনি যখন জেগে উঠলেন তখন অনেকেই ঘুমিয়ে ।নিজেকে জানার, অনুভব করার সময় পেলেন ।থ্যাংকস, আল্লাহ(গড/ ঈশ্বর) বলার মতো সুযোগ পেলেন ।
(৩) মর্নিং রিচুয়াল :
সকাল সকাল রিচুয়ালে যখন বসবেন তখন আপনি অনুভব করতে পারবেন আপনার কনটেন্টমেন্ট । এই রিচুয়াল আমাদের ভেতরের নেগেটিভ ইমোশান গুলোকে ফিল্টার করবে । আমাদের আমিত্ব, অহংকার, দম্ভ কমতে থাকবে, ট্রাস্টমি । এটা ঘটবেই, যখন আমরা এটা নিয়মিত করব ।
(৪): শারিরীক কসরত :
রিচুয়াল শেষে শারিরীক কসরত করতে পারেন ,এটা খুব দরকারী নির্মল বাতাসে দৌড়াতে পারেন, হাটতে পারেন পার্কে, মাঠে, কিংবা বাসার ছাদে । এটা শরীরে এক ধরনের হরমোন রিলিজ করে ।যা আমাদের তাজা রাখে, কর্মস্পৃহা বাড়ায়, মানসিক চাপকমায় ।
আমি হলিডে কিংবা অফিসের কাজ, যখন যেখানে যাই আমার ব্যাগে রানিং ট্রেইনার নিতে ভুলিনা আর কিছু করতে পারি না পারি, অন্তত জগিং করতে ৩০ মিনিট বের করবই আমি ।হোক সেটা ট্রেডমিলে, পার্কে, কিংবা সমুদ্রের তীরে । এটা এমন একটা লাইফ স্টাইল যেটা আপনাকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি সবসময় চাঙ্গাও রাখবে ।
(৫): সৃষ্টিশীলতার চর্চা :
সকাল বেলা উঠার আরো একটা ভালো দিক হলো এসময় সৃষ্টিশীল কাজ করা যায় ।আমি লিখালিখি করি । বই পড়ি । বই না পড়লে আমরা নতুন অনেক কিছুই শিখতে পারবনা ।কাজেই এই অভ্যাস আপনাকে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রাখবে ।
(৬): মর্নিং ব্রেকফাস্ট :
মর্নিং ব্রেকফাস্ট হলো দিনের সেরা খাবার ।অথচ অনেকেই চা বিস্কিট দিয়ে নাস্তা সেরে দুপুরে পেট ভরে খান । আর রাতে গিলেন গলা পর্যন্ত ।এটা খুবই অস্বাস্থ্যকর । রাতে খেতে হবে হাল্কা খাবার, ৮টা- ৯টার মধ্যে ।আই মিন, ঘুমানোর দুঘন্টা আগেই ডিনার শেষ করতে হবে । দুপুরে খাবার হবে তারচেয়ে সামান্য ভারী । আর সবচেয়ে ভারী হতে হবে ব্রেকফাস্ট ।এখন রাত ১১ টায় ডিনার করে ১২ টায় ঘুমালে সকালে কী ওই এপিটাইট থাকবে ? থাকবেনা ।কাজেই অভ্যাস বদলাতে হবে ।
আমি প্রচুর সময় পাই । আলহামদুলিল্লাহ, টাইম ম্যানেজ করতে পারি ভালোভাবে ।মহান আল্লাহর ইচ্ছায় তাই নানা কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারি ।কারণ আই এ্যাম এ্যা প্রাইড মেম্বার অব ফাইভ এ.এম ক্লাব ।
আমার অনুরোধ, এই অভ্যাস গুলো করে দেখুন ।দেখবেন, জীবনে টাইমম্যানেজমেন্টকে কোনো ধাঁধা মনে হবেনা । মনে হবে সিম্পল ম্যাথ ।